Humayan Rashid

মাল্টা স্টুডেন্ট ভিসার পরিপূর্ণ গাইডলাইন

মাল্টা ইউরোপের ছোট্ট একটি দ্বীপ রাস্ট্র যার আয়তন ৩১৬ স্কয়ার কিলোমিটার এবং জনসংখ্যা প্রায় ৩ লক্ষ ৫০ হাজার এর কাছাকাছি। এই ছোট্ট দেশকে ইউরোপে প্রবেশের প্রবেশদ্বার বলা হয়ে থাকে। আমরা অনেকে চাই মাল্টাতে স্টুডেন্ট ভিসায় পড়াশুনা করতে। আমি জানিনা কত জন পড়াশুনা করার জন্য মাল্টা পাড়ি জমায়।সবারই একই উদ্দেশ্য থাকে মাল্টাতে স্টুডেন্ট ভিসায় প্রবেশ করে পরবর্তীতে ইউরোপের অন্য যে কোনো ভালো দেশে পাড়ি জমানো। এজন্য আজকে মাল্টা স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে আমার এই লিখা। আমি আজকের লিখায় মাল্টা স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।

মাল্টা
মাল্টা সম্পর্কে যদি বলতে চাই তাহলে প্রথমেই বলতে হবে এটি একটি দ্বীব রাষ্ট্র। মাল্টার আয়তন মাএ ৩১৬ স্কয়ার কিলোমিটার। এই ছোট্ট আয়তন এর দেশের মোট জনসংখ্যা ৩ লক্ষ ৫০ হাজার। মাল্টার মুদ্রা ইউরো এবং সব চাইতে মজার বিষয় হল মাল্টায় মানুষজন যোগাযোগ এর জন্য ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করে। ওহ্ হ্যা আর একটি কথা বলতে ভুলে গেছি, সেটি হল মাল্টা একটি ইউরোপিয়ান দেশ।মানে সেনজেন ভুক্ত ২৭ টি দেশের মধ্যে মাল্টা একটি। মাল্টা ট্যুরিজম এর জন্য বিখ্যাত। মানে দ্বীপ রাষ্ট হওয়াতে এখানে অন্য দেশের মানুষজন ঘুরাফিরা করার জন্য আসে।মাল্টা অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী হওয়ার পাশাপাশি তারা তাদের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রসারে অনেক কাজ করে থাকে ।

মাল্টায় উচ্চ শিক্ষা
মাল্টা বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে উচ্চশিক্ষা নেওয়ার জন্য তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি যোগ্যতা পূরণ, স্টুডেন্ট ভিসা হাতে পাওয়া, ভর্তি হওয়ার জন্য যা যা কাগজ পত্র লাগবে এবং মাল্টাতে উচ্চশিক্ষা নেওয়ার জন্য প্রাসঙ্গিক যা যা বিষয় জানা প্রয়োজন তার সবটুকুই আমরা আজকে আপনাকে জানাবো।

মাল্টায় কেন পড়াশোনা করবেন?
১। পড়াশোনার পাশাপাশি ট্যুরিজম ও বিজনেসের জন্য সেরা কয়েকটি স্থানের মধ্যে একটি হচ্ছে মাল্টা।
২। এখানে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত ডিগ্রি প্রদানকারী অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে।
৩। তুলনামূলকভাবে স্বল্প টিউশন ফি দিয়ে পড়াশোনা করতে পারবেন।
৪।স্বল্প খরচে বাস করতে পারবেন।
৫। শিক্ষা খাতে নিত্যনতুন বৈচিত্র্য দেখতে পাবেন।
৬। পড়ালেখার পাশাপাশি কাজ ও ব্যবসা করার সুযোগ পাবেন।
৭। অনেক ধরনের কোর্স থেকে নিজের পছন্দমতো কোর্স বাছাই করে পড়তে পারবেন।

মাল্টায় স্টুডেন্ট ভিসার জন্য যোগ্যতা
দেখেন যে দেশেই আপনি পড়াশোনার জন্য যেতে চান না কেন, আপনার নূন্যতম কিছু যোগ্যতা থাকতে হবে। চলুন দেখে নেই কি কি যোগ্যতা থাকলে আমরা মাল্টাই স্টুডেন্ট ভিসা পেতে পারি।

১। আপনাকে বাংলাদেশ এর পাসপোর্টধারী নাগরিক হতে হবে।
২। অনার্স যদি করতে চান তাহলে আপনার HSC শেষ করতে হবে।
৩। মাস্টার্স যদি করতে চান তাহলে বাংলাদেশ এর যে কোনো ইউনিভার্সিটি থেকে অনার্স এর সার্টিফিকেট থাকতে হবে।
৪। অনেক সময় IELTS লাগে। আবার না ও লাগতে পারে।
৫। ব্যাংক সল্ভন্সি থাকতে হবে।

মাল্টায় কিভাবে ভর্তি হবেন
মাল্টার যে কোনো ইউনিভার্সিটি তে ভর্তি হতে হলে আপনি দুইটা রাস্তা ফলো করতে পারেন।
১। নিজে নিজে এপ্লিকেশন
২। এজেন্ট দিয়ে এপ্লিকেশন

১। নিজে নিজে এপ্লিকেশন – আপনি যদি নিজে নিজে এপ্লিকেশন করতে চান তা হলে আপনাকে প্রথমে ইউনিভার্সিটি খুজে বের করতে হবে। তারপর আপনি নিজে তাঁদের এডমিশন পোর্টালে গিয়ে নিজের জন্য এপ্লিকেশন সাবমিট করতে পারবেন। তারপর ইউনিভার্সিটি আপনাকে আপনার সাথে আপনার দেওয়া ইমেইল এ যোগাযোগ করবে।

২। এজেন্ট দিয়ে এপ্লিকেশন – এইটা বাংলাদেশ এর চলমান একটা রাস্তা। মাল্টা নিয়ে কাজ করে এমন যে কোনো এজেন্সি এর সাথে যোগাযোগ করে আপনি তাঁদের মাধ্যমে এপ্লিকেশন করতে পারেন। এই ক্ষেত্রে একটা বিষয় আপনাকে সব সময় মাথায় রাখতে হবে যে, এজেন্সি যাতে ট্রাস্ট করার মতো হয়।

যেভাবে ভিসার জন্য আবেদন করবেন
মাল্টার ভিসার আবেদন আপনি নিজে ও করতে পারবেন। আবার যদি চান যে কোনো এজেন্সি এর সহযোগিতা নিবেন সেইটা ও করতে পারেন। আমি পুরো স্টেপ টা নিচে বুঝাই বলছি।

১। প্রথমে আপনি VFX Global Malta Office এ এপয়েন্টমেন্ট নিবেন।
২। তারপর ভিসা এর ফর্ম ফিলাম করবেন।
৩। আপনার সকল ডকুমেন্টস যদি রেডি থাকে তাহলে আপনার VFX Global এ পাওয়া ডেট এ গিয়ে আপনি আপনার ডকুমেন্টস জমা দিবেন।
৪। VFX Global এ তাঁদের সার্ভিস চার্জ নিবে। আমি যখন করে ছিলাম তখন ১৭০০০ টাকার মতো লেগেছিল।

মাল্টায় বসবাসের অবস্থা কেমন?
মাল্টার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক দল, গেইম ক্লাব, জিমসহ অন্যান্য ক্লাবের সাথে কাজ করতে পারবেন। সেখানে আপনি বিভিন্ন ধরণের খেলাধুলা ও অ্যাক্টিভিটির সাথে জড়িত থাকার সুযোগ পাবেন। প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়েই বিভিন্ন ধরণের সঙ্গীত, নাচ ও সাংস্কৃতিক ক্লাব রয়েছে। বসবাসের অবস্থানের উপর ভিত্তি করে আপনি চাইলে প্রত্যেক মাসে ৯০০০ টাকা থেকে ২০০০০ টাকা খরচ করে ভালোমানের স্টুডেন্ট হোস্টেলে থাকতে পারবেন। প্রাইভেট ফ্ল্যাটে থাকতে চাইলে প্রতি মাসে আপনাকে গুনতে হবে ২০০০০ টাকা থেকে ৫০০০০ টাকা পর্যন্ত। প্রত্যেক মাসে শুধুমাত্র খাবার খরচ পড়বে ১০০০০ টাকার মতো।

আমি জানিনা কত টুকু আপনাদের বুঝাতে পারলাম। আমার ব্লগে আরো অনেক লিখা আছে। আপনি এইটা পরে যদি কিছু বুঝতে না পারেন, তাহলে অবশ্যই ঐগুলা পড়ে নিবেন। আশা করি সব বুঝতে পারবেন। আর আমার চ্যানেল ফলো করতে পারেন।

Related Post

Humyan Rashid

Digital Content Creator & Independent Freelancer

best web hosting for your website