আপনার যদি একটি বৈধ বাংলাদেশি পাসপোর্ট থাকে, তাহলে আপনার জন্য রয়েছে দারুণ কিছু ভ্রমণের সুযোগ। বর্তমানে এমন অনেক দেশ রয়েছে যেখানে বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীরা ভিসা ছাড়াই অথবা ভিসা অন-অ্যারাইভাল অথবা ই-ভিসা সুবিধায় প্রবেশ করতে পারেন।
চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন কোন দেশে আপনি এই সুবিধা পেতে পারেন
বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীরা নিচের ২০টি দেশের ভিসা ছাড়াই ভ্রমণ করতে পারেন:
- এশিয়া (৬টি দেশ): ভুটান, কম্বোডিয়া, মালদ্বীপ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, টিমর-লেস্টে
- দক্ষিণ আমেরিকা (১টি দেশ): বলিভিয়া
- উত্তর আমেরিকা (ক্যারিবীয় অঞ্চল – ১১টি দেশ): বাহামাস, বার্বাডোস, ডোমিনিকা, হাইতি, জামাইকা, মন্টসেরাট, সেন্ট কিটস ও নেভিস, সেন্ট ভিনসেন্ট ও গ্রেনাডাইনস, ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জ, গ্রেনাডা, ট্রিনিডাড ও টোবাগো
- ওশেনিয়া (৮টি দেশ): ফিজি, কুক দ্বীপপুঞ্জ, কিরিবাতি, নিউয়ে, মাইক্রোনেশিয়া, সামোয়া, টুভালু, ভানুয়াটু
- আফ্রিকা (১৬টি দেশ): গাম্বিয়া, বুরুন্ডি, কেপ ভার্দে, কমোরোস, জিবুতি, গিনি-বিসাউ, লেসোথো, মাদাগাস্কার, মৌরিতানিয়া, মোজাম্বিক, রুয়ান্ডা, সেশেলস, সিয়েরা লিওন, সোমালিয়া, টোগো
মনে রাখবেন: যেসব দেশে ভিসা ছাড়া প্রবেশ সম্ভব, সেসব দেশের অনেকগুলোতে প্রবেশের জন্য পাসপোর্টের মেয়াদ কমপক্ষে ৬ মাস থাকতে হবে এবং স্বাস্থ্য বীমা থাকতে পারে।
ভিসা অন-অ্যারাইভাল (Visa on Arrival) সুবিধা যেসব দেশে
আপনি আগেই কোনো প্রকার ভিসা না নিয়ে, সরাসরি গন্তব্যে গিয়ে ভিসা সংগ্রহ করতে পারবেন নিম্নলিখিত দেশে:
- এশিয়া: মালদ্বীপ, ভুটান, নেপাল, টিমর-লেস্টে, শ্রীলঙ্কা
- আফ্রিকা: কেপ ভার্দে, মৌরিতানিয়া, বুরুন্ডি, কমোরোস, গিনি-বিসাউ, মাদাগাস্কার, রুয়ান্ডা, সেশেলস, সিয়েরা লিওন, সোমালিয়া
- দক্ষিণ আমেরিকা: বলিভিয়া
- ওশেনিয়া: টুভালু
আবশ্যক ডকুমেন্টস:
- বৈধ পাসপোর্ট (ছয় মাস মেয়াদ সহ)
- সাম্প্রতিক পাসপোর্ট সাইজ ছবি
- ফ্লাইট ও হোটেল বুকিং
- ভ্রমণসূচি
- আবেদন ফি (ক্রেডিট কার্ড/ক্যাশ)
ই-ভিসা সুবিধা যেসব দেশে
ইলেকট্রনিক ভিসা বা ই-ভিসা এখন খুবই জনপ্রিয়। আপনি অনলাইনে আবেদনের মাধ্যমে সহজেই ই-ভিসা পেতে পারেন। নিচের দেশগুলো বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ই-ভিসা অফার করে:
- এশিয়া: বাহরাইন, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, মালয়েশিয়া, মায়ানমার, কাতার, তাজিকিস্তান, ভিয়েতনাম
- ইউরোপ: আলবেনিয়া
- আফ্রিকা: বেনিন, বটসোয়ানা, বুর্কিনা ফাসো, ক্যামেরুন, আইভরি কোস্ট, জিবুতি, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, ইথিওপিয়া, গাবন, গিনি, কেনিয়া, মালাউই, মোজাম্বিক, নাইজেরিয়া, সাও টোমে ও প্রিন্সিপে, দক্ষিণ সুদান, টোগো, উগান্ডা, জাম্বিয়া, জিম্বাবুয়ে
- ক্যারিবিয়ান: অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডা
- দক্ষিণ আমেরিকা: সুরিনাম
ই-ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া সাধারণত দেশ অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আবেদনকারীদের অনলাইনে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আপলোড করে আবেদন করতে হয়।
ভিসা-ফ্রি, অন-অ্যারাইভাল বা ই-ভিসার আওতায় না থাকলে আপনাকে পূর্বে আবেদন করে ট্যুরিস্ট ভিসা সংগ্রহ করতে হবে।
ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট:
- পূরণ করা ভিসা আবেদন ফর্ম
- বৈধ পাসপোর্ট (ছয় মাস মেয়াদসহ)
- পুরানো পাসপোর্ট (যদি থাকে)
- সাম্প্রতিক ছবি
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট (শেষ ৬ মাসের)
- ফ্লাইট ও হোটেল বুকিং
- আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণ
- ম্যারেজ সার্টিফিকেট (যদি প্রযোজ্য হয়)
বিশ্ব ভ্রমণের স্বপ্ন আর স্বপ্ন নয়! আপনার কাছে যদি থাকে একটি বৈধ বাংলাদেশি পাসপোর্ট, তাহলে আপনি অনেক দেশেই ঘুরে আসতে পারেন খুব সহজেই। ভিসা ছাড়া, অন-অ্যারাইভাল কিংবা ই-ভিসা — প্রতিটি অপশন আপনাকে বিশ্ব দেখার দারুণ সুযোগ করে দিচ্ছে। ভ্রমণ পরিকল্পনার আগে দেশের বর্তমান প্রবেশ নীতিমালা জেনে নিন এবং ডকুমেন্ট ঠিকমতো প্রস্তুত রাখুন।